সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন সম্ভব

সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন সম্ভব

আসসালামু আলাইকুম ভাইয়েরা আমার।পুরা লেখাটা পরে মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।
.
কোন মাঝহাবের লোকেরা একজন ইমামকে মানে না।যদি কেউ দাবি করে আমি বলব হয়ত সে নিজের মাঝহাবকে বুঝে নাই নতুবা মিথ্যা বলে।আসুন হানাফি মাঝহাবের লোকেরা ইমাম আবু হানিফাকে মানে কিনা?
.
ইমাম আবু হানিফা(রহ:) বলেছেন,যদি দুনিয়ার মাশরিক থেকে মাগরিব পর্যন্ত কোন এক জায়গায় ঈদের নতুন চাঁদ দেখা যায় অথবা রমজানের চাঁদ দেখা যায় তাহলে পুরা দুনিয়ার মানুষকে এক হুকুম মেনে নিতে হবে।তিনি দলিল পেশ করেছেন, তিনি বলেছেন যে,এটাই যুক্তিসংগত।কারন হচ্ছে এই দুনিয়া কইটি?একটি।
চাঁদ কইটি?একটি।
কুরআন কইটি?একটি।
আমরা কয় নবীর উম্মত?এক নবীর।
আমরা জুমাহ পড়ি কইদিনে?একদিনে।
সারা দুনিয়ায় জুমার নামাজ এক দিনে পরি নাকি ভিন্ন ভিন্ন পরি?এক দিনে পরি।সময় যার যার মত।তাহলে ইমাম আবু হানিফা(রহ:) এর বক্তব্য হচ্ছে এই সারা দুনিয়াতে যেকোন প্রান্তে যদি চাঁদ দেখা যায়, তাহলে সারা দুনিয়ার লোকেরা রোজা রাখা শুরু করবে একসাথে।আবার সারা দুনিয়ার কোন এক প্রান্তে যদি ঈদের চাঁদ দেখা যায় তাহলে ঈদ হয়ে যাবে। এটাই আবু হানিফা (রহ:)এর বক্তব্য এবং তিনি আরো দলিল পেশ করেছেন।
.
লাইলাতুল কদরে কুরআন নাযিল হইয়েছিল।লাইলাতুল কদর কইটা?একটা।নাকি দুইটা। যদি তোমরা আলাদা কর তবে লাইলাতুল কদর থেকে বঞ্চিত হইবে।কারন লাইলাতুল কদরে আল্লাহ কুরআন নাযিল করেছেন।আর কুরআন নাযিল হয়েছিল মক্কায়।মক্কার লাইলাতুল কদর যেটা, সারা দুনিয়ার লাইলাতুল কদর সেটা হবে।নাকি আলাদা হবে?তাহলে মক্কাই যখন লাইলাতুল কদর বেজোড় রাত্রে হয়, বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া,পাকিস্তানে তখন হয় জোড় রাত্র।আর বাংলাদেশে যখন জোড় রাত্র হয়, তখন সৌদি আরবে বেজোড় রাত্র।তাহলে লাইলাতুল কদর কোনটা সঠিক?দুইটি বলতে পারবেন না।কারন এই লাইলাতুল কদরের সম্পর্ক আছে কুরআন নাযিলের। কুরআন তো আর দুই রাত্রে নাযিল হই নি?যে একবার নাযিল হইয়েছিল লাইলাতুল কদর বাংলাদেশের টাতে?আরেকবার নাযিল হয়েছিল লাইলাতুল কদর সৌদি আরবের টাতে?কুরআন কি দুইবার নাযিল হইয়েছিল নাকি একবার নাযিল হয়েছিল?কুরআনকে আল্লাহতায়ালা লাইলাতুল কদরে নাযিল করেছেন।কুরআনে উল্লেখ আছে, আমি কুরআনকে নাযিল করেছি লাইলাতুল কদরে।লাইলাতুল কদর কইটা?একটা। কুরআন নাযিল হয়েছে কয় রাত্রে?এক রাত্রে।কিন্তু এখন দুনিয়াতে লাইলাতুল কদর কয়টা করতে হয়? অনেকগুলো।
.
প্যাঁচটা লাগল কোন জায়গায়?আপনি বলবেন যে,লাইলাতুল কদর এক রাত্রে হবে।তাও হয়ত যদি জোড় বিজোড়ের হিসাব না থাকত।এখন তো প্যাঁচ লাগছে আরো।সৌদি আরবে যখন বিজোড় বাংলাদেশে তখন জোড়।বাংলাদেশে যখন বিজোড় সোদি আরবে তখন জোড়।আপনি যে বলবেন এর মধ্যে যে রাত্রি হবে সেই রাত্রি এক।সেটা বলা যাবেনা।আর যদি বলেন যে, না লাইলাতুল কদর একটা।সময় যার যার মত।তাহলে আমরা বলব জুমাহর দিন যেরকম জুমাহর নামাজ সারাবিশ্বে একদিনে পড়ি।সময়টা যার যার মত।এখন আমরা জুমাহ পরা শেষ করেছি।আরো তিন ঘন্টা পর সৌদি আরবের লোকেরা জুমাহর সালাত শুরু করবে।এখন সৌদি আরবের লোকেরা জুমাহর নামাজে যাচ্ছে।যেহেতু পৌনে তিনটা বাজতেছে।তারমানে পৌনে বারটা।এখন হেরেম শরীফের চারদিকে লোকেরা জড়ো হচ্ছে।আরো আধা ঘন্টা পরে আযান হবে।আযান হয়ে তারপরে নামাজ পরবে।তাহলে শুক্রবার একটাই ঠিক আছে।আমেরিকাতেও আজকে শুক্রবারেই জুমাহ পরবে।সময়টা যার যার মত।ঠিক এইরকমভাবে লাইলাতুল কদর পুরা দুনিয়াতে কয়টা হবে?একটা।ঈদ কয়টা হবে?একটা।রোজা কয়দিনে হবে?একি সাথে হবে।
.
এই কথা বললে আমাদের দেশের আলেমরা কি বলে জানেন?আমরা তো নামাজ একসময়ে পড়িনা।উনাদের কথা খেয়াল রাখবেন।নামাজ তো আমরা একসময়ে পড়িনা। রোজা কেন একসময়ে রাখব?আমি বলি তোমার কথা দুই কারনে ভুল।এক হচ্ছে এই,নামাজ আমরা একসময়ে পড়িনা।রোজাও তো তুমি একসময়ে রাখনা এটা বলনা কেন?সারা বাংলাদেশের এক কোনা থেকে আরেক কোনায় এক সময়ে রোজা রাখে?এক সাথে রোজা ভাংগে?টাইমে বেশকম আছেনা?আছে।দিন একটা।টাইম কি?ভিন্ন ভিন্ন।তোমার দেশের মধ্যেই যখন টাইম ভিন্ন ভিন্ন হিসেব করতেছ।নাহলে এক টাইমে কর।ঢাকায় যখন আযান দেয় ইফতারির টাইম সারা বাংলাদেশে তখন ইফতার কর?করে তখন?না।কেন করেনা?দেরি করে কিজন্য?সাত মিনিট পরে,তিন মিনিট পরে,চার মিনিট পরে।বরিশালে চার মিনিট,অমুক জায়গায় তিন মিনিট, কক্সবাজারে ৫মিনিট।পাঁচ মিনিট দেরি করে না?এই যেমন তুমি একি দিনে করছ কিন্তু সময় যার যার মত।এটার পরিধি বাড়াও।যে সারা দুনিয়াতে একদিনে রোজা শুরু হবে। সময় যার যার মত।সোদি আরবে তিন ঘন্টা পরে,আমেরিকায় ১১ ঘন্টা পরে।সমস্যা আছে কোন?না।এই বর্ডার তৈরি করেছে কে?
.
আজকে ইন্ডিয়াতে চাঁদ দেখা গেল মনে করেন যশোরের ওই পারে।পুরো ইন্ডিয়াতে ঈদ করবে।অথচ ইন্ডিয়া বাংলাদেশের ২৫ টা রাস্ট্রের চেয়েও বড়।এক ইউপি উত্তর প্রদেশ।এটা বাংলাদেশের চেয়েও অনেক বড়।এক ইন্ডিয়া সব এক হুকুমে।আচ্ছা ধরেন আজকে বাংলাদেশটাকে জোড়করে ইন্ডিয়া নিয়ে গেল।বর্ডার নাই তখন কি হবে?তখন কইবে যে,ওহ আমরা এখন ইন্ডিয়ার ভিতরে আছি কাজেই ইন্ডিয়ার যে হুকুম ওই হুকুমে চলে গেছি আমরা।ইন্ডিয়ার বর্ডার, বাংলাদেশের বর্ডার, পাকিস্থানের বর্ডার এগুলো কি ইসলাম সাব্যস্ত করেছে?না।একটা লোক ইন্ডিয়ার ওই পারে চাঁদ দেখল, সারা ইন্ডিয়াতে ঈদ করল।আমরা এই পাড়ে যারা যশোর এর ওইখান থেকে এক মাইল দুরে নদীর এই পারে সেই লোকটা ঈদ করতে পারছেনা।কিজন্য??কারন বাংলাদেশে চাঁদ দেখা যাইনি।আর বাংলাদেশে যদি যশোরের বর্ডারে কেউ চাঁদ দেখে তাহলে কক্সবাজারে,পার্বত্য অঞ্চলে, লোকটা ঈদ করবে।কিজন্য? কারন, সে বাংলাদেশে।অথচ ওখানে থেকে ওখানের পার্থক্য আছেনা?হুকুম কর যে বাংলাদেশের ঢাকাই আলাদা হুকুম, চিটাগাং এ আলাদা হুকুম, সিলেট এ আলাদা হুকুম।প্রত্যেক এলাকাতে আলাদা আলাদা চাঁদ দেখতে হবে।
.
কারন আল্লাহর রাসুল(সা:)বলেছেন,তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ আর চাঁদ দেখে রোজা ছাড়।তোমরা চাঁদ দেখ, কাজেই তোমরা ঢাকার লোকেরা চাঁদ দেখ,বরিশালে চাঁদ দেখো, ইন্ডিয়াতে চাঁদ দেখো,পাকিস্থানে চাঁদ দেখো,ইন্ডিয়ার মধ্যে আবার প্রদেশটা আলাদা হবে,জিলা আলাদা হবে।কক্সবাজারে চাঁদ দেখো।পার্বত্য অঞ্চলে চাঁদ দেখো।সিলেটে চাঁদ দেখো।কেন আল্লাহর রাসুল বলেছেন চাঁদ দেখে রোজা রাখ,চাঁদ দেখে রোজা ছাড়।খবরদার! কেউ চাঁদ না দেখে রোজা রাখতে পারবে না।আপনারা এবার কইজনে চাঁদ দেখছেন?কয়েকজন।তো চাঁদ দেখে রোজা রাখেন নাই,চাঁদ দেখে রোজা ছাড়েন নাই, কাজেই একটা রোজাও হয় নাই নাকি??
.
কোন ফেকাহবিধ এটা বলেছেন?এটা বলেন নাই।বরং তোমরা বলতে কি বুঝায় তাহলে?এখন আমাদের ওলামারা বলেন,তোমরা বলতে একেক দেশের লোকেরা। আবার এটা পেলে কোথাই?তোমরা বলতে আল্লাহর রাসুল(সা:) বলেছেন,তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ।তার মানে গোটা মুসলিম উম্মাহর তোমরা মানে কিছু লোকেরা যদি চাঁদ দেখে তাহলে রোজা রাখা শুরু করে দাও।আর তোমাদের কিছু লোকেরা যদি দুনিয়ার যেকোন প্রান্তে ঈদের চাঁদ দেখে সবাই ঈদ কর।সহজ সমাধান হয়ে গেল না?এই ছিল আল্লাহর নবীর হুকুম।এটা ছিল ইমাম আবু হানিফার বক্তব্য। আমি বলেছিলাম আবু হানিফার বক্তব্য এটা।আর এটাই যুক্তিসংগত। এটা হলে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে আর তিনদিন ঈদ করা লাগেনা।মুসলিম উম্মা অনেকদিকে বঞ্চিত হয়না।আজকে যখনই আমরা বলি যে সারা দুনিয়াতে রোজা হবে একদিনে,ঈদ হবে একদিনে।তখন লোকেরা বলে নামাজ তো আমরা একসময়ে পড়িনা।আমি উত্তর দিলাম কি?নামাজ যেমন তুমি একসময়ে পড়না,তোমার দেশে বসেও কি তুমি রোজা একসময়ে রাখ একসময়ে ছাড়?না।সময় যার যার মত।
.
আসল বিষয়টা হচ্ছে লোকগুলো জানেনা নামাজের সম্পর্ক হচ্ছে সুর্যের সাথে আর রোজা,ঈদের সম্পর্ক চাঁদের সাথে।আরো স্পস্ট হলো, আরবী মাস এবং তারিখ নির্ধারণ হয় চাঁদের মাধ্যমে, সময় নির্ধারণ হয় সুর্যের মাধ্যমে।
নামাজ রোজার সময়ের সম্পর্ক কার সাথে? সুর্যের সাথে।কেমনে? দলিল নেন,
আল্লাহর রাসুল(সা:) যখন নামাজ শিক্ষা দিলেন ফযরের নামাজ কোন সময়ে হবে?সুবহে সাদেক।মানে সুর্য কিরন যখন দুনিয়ার বুকে চলে আসে তখন থেকে শুরু হয়ে যায় সুর্য উদয়ের আগ পর্যন্ত।ফযরের নামাজের সম্পর্ক কার সাথে?সুর্যের সাথে। যোহরের নামাজ কখন হবে?সুর্য যখন পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়বে তখন থেকে শুরু করে সুর্য আলো যখন এক মিসাইল চলে যাবে ততক্ষন।কার সাথে সম্পর্ক?সুর্যের সাথে। আসরের ওয়াক্ত কখন শুরু হবে?ওই এক মেসয়াইল এর পরের থেকে দুই মেসয়াইল ডুবার আগ পর্যন্ত।আসরের নামাজের সম্পর্ক কার সাথে? সুর্যের সাথে।মাগরিবের নামাজের টাইম কখন হবে?সুর্য ডুবার পরের থেকে।এশার নামাজের টাইম কখন হবে।সুর্যের আলো যখন পশ্চিম আকাশের যখন ওই যে আভা যখন ডুবে যাবে।তাহলে বুঝা গেল নামাজের সম্পর্ক কার সাথে?সুর্যের সাথে।এবারে রোজার সময়ের সম্পর্ক কার সাথে দেখেন।আল্লাহ তায়ালা বলছেন,
তোমরা সিয়ামের জন্য পানাহার কর সুবহে সাদেক(ফযর) পর্যন্ত। তোমরা রোজা পুরন কর কোন পর্যন্ত? ইলাল লাইল।রাত পর্যন্ত।তাহলে বুঝা গেল রোজার সময়ের সম্পর্ক কার সাথে? সুর্যের সাথে।আর দিন,তারিখের সম্পর্ক কার সাথে? চাঁদের সাথে।বিষয়টা ক্লিয়ার?তারমানে হচ্ছে তারিখ হবে পুরা দুনিয়াতে একটা।কইটা? একটা। ইংরেজী তারিখ কয়টা হয়?একটা। বাংলা তারিখ কয়টা হয়?একটা।তাহলে মুসলিমদের আরবি তারিখ কয়টা হবে?একটা।
.
আচ্ছা,তারপরও যদি মানতে রাজি না হন তাহলে এবার আমি আসব এই যে আরবি তারিখটার নাম কি বলে?হিজরি সন।হিজরত করেছিল বাংলাদেশের লোকেরা সেজন্য হিজরি সন হয়েছে? বাংলাদেশের কোন নেতা হিজরত করে পাকিস্থান গিয়েছিলেন যেদিন সেদিন থেকে হিজরি সন গননা শুরু হয়েছে।বিষয়টা এমন?? বাংলাদেশের কোন বুজুর্গ যেদিন আত্মপ্রকাশ করেছেন সেদিন থেকে হিজরি সন গননা শুরু হয়েছে।বিষয়টা এইরকম?হিজরি সনটা কখন ঘোষনা করা হয়েছে?আল্লাহর নবী মুহাম্মদ(সা:) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে গিয়েছিলেন, সেই সময় থেকেই হিজরি সন গননা করা শুরু হয়।তাহলে হিজরি সনের তারিখটা কি ওইটার সাথে সম্পর্ক রাখা হবে নাকি বাংলাদেশেরটা হবে?যারা বাংলাদেশের হিজরি সন গুনে তারা কি করে?তারা কার হিজরতের সন গননা করে?মুহাম্মদ(সা:) এর হিজরি সন নাকি অন্য কারো হিজরতের সন?কার হিজরি সন?আরবি সনটা কিসের সন?হিজরি সন।হিজরি সনের সম্পর্ক কিসের সাথে?হিজরতের সাথে। কে হিজরত করেছিল?মুহাম্মদ(সা:)।সেটা কি বাংলাদেশের হিজরি তারিখে নাকি আরবদের হিজরি তারিখে?তাহলে আপনি কোনটা মানতেছেন?
.
এরপরে আসুন,আরাফাতের ময়দানের হাজ্বিরা ৯ তারিখে যখন আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে সেই সময়ে অন্যদের জন্য(গাইরে হাজীদের)জন্য রোজা রাখা অনেক সওয়াবের কাজ।এখন আরাফাতের ময়দানে যেদিন অবস্থান করেন জিলহজ্জ্ব মাসের ৯ তারিখ(রোজা রাখা সবার জন্য ফযীলতের বিষয়)।এখন বাংলাদেশের মানুষেরা কোন দেশের ৯ তারিখে রোজা রাখবে?সৌদি আরবের জিলহজ্জ্ব মাসের নয় তারিখে নাকি বাংলাদেশের জিলহজ্জ্ব মাসের ৯ তারিখে?যদি বলেন সৌদি আরবের জিলহজ্জ্ব মাসের ৯ তারিখে তাহলে তো ভাইজান বাংলাদেশের ৯ তারিখ হয় নাই।আপনি কিসের আরাফাতের দিন রোজা রাখতেছেন?আর যদি বলেন আমি বাংলাদেশের জিলহজ্জ্ব মাসের ৯ তারিখে রোজা রাখব তাহলে ওই সময় মেহেরবানি করে দেখবেন আরাফাতের ময়দানে তখন কোন হাজী সাহেব থাকে না। সব চলে গেছে ওখান থেকে।তাহলে এই যে আপনি আরাফাতের দিন রোজা রাখবেন কোন আরাফাতের দিন?জিলহজ্জ্ব মাসের প্রথম ১০ দিন এবং রাতের অনেক ফযীলত।রাতে ইবাদত করে, দিনে রোজা রাখ।কোন ১০ দিন? বাংলাদেশের জিলহজ্জ্ব মাসের ১০ দিন নাকি সৌদি আরবের প্রথম ১০ দিন।
.
এরপরে আরো গন্ডগোল লাগবে যদি আরেকটি হাদিস পড়েন।হাদিসটা যদিও দুর্বল, কিন্তু বলা আছে,যে কেয়ামত হবে আশুরার দিন বা মোহররম মাসের ১০ তারিখ জুমাহর দিনে। কিন্তু কোন দেশের মহররম??বাংলাদেশের টা নাকি সৌদি আরবের টা?যদি সৌদি আরবের মহরম মাসের ১০ তারিখে ওখানে কেয়ামত শুরু হয়, তাহলে আমরা তো বাংলাদেশে টেলিভিশনে দেখব কেয়ামত শুরু হয়ে গেছে।অথবা মোবাইল দিয়ে আমাদেরকে বলে দেয়া হবে কেয়ামত শুরু হয়ে গেছে। আমরা এখানে তওবা পরে সবাই এক্কেবারে পাক্কা মুসলমান হয়ে যাব আর কেয়ামত ই হবেনা এখানে। কেয়ামত ফিরে যাবে।
.
যাই হোক, আমি বলছিলাম ইমাম হানিফা (রহ:) হাদিসকে উনি সহি বুঝেছেন। ওইযে, বিভিন্ন দেশের বিভন্ন হুকুম ওটা ইমাম শাফী সাহেবের বক্তব্য। তাও একটা বিশেষ কারনে।ইমাম শাফী(রহ:) উনি বলেছেন,যে আসল বিষয়টা হচ্ছে যদি এখন বলি সারা দুনিয়ায় এক হুকুমে চলবে আগের যুগে তো খবর পোঁছানো সম্ভব ছিল না।এইখানে চাঁদ দেখা গেল আমি খবর পোঁছাইতে পারলাম না তাহলে তারা কি করবে?এই জন্য উনি বলেছেন, একটা দ্রুতগামী ঘোড়ায় চড়ে সারা দিনে যে পর্যন্ত পোঁছান সম্ভব,ওই পর্যন্ত লোকদের জন্য এক হুকুম।তাহলে বুঝা গেল এটা একটা ভিন্ন ব্যাপার ছিল।খবর পোঁছানো যায় না বিধায়।আমরা বলি ধন্যবাদ সেই জন্য।খবর না পোছাইতে পারলে ঈদ করবে কেমনে তাহলে?
রোজা রাখবে কেমনে?ঠিকই ছিল।কিন্তু এখন কি আর সেই সমস্যা আছে?এখন পুরা দুনিয়া বলা হয় একটা গ্লোবাল ভিলেজ।যখন একটা দুনিয়া একটা মুঠের মধ্যে চলে আসল। এখন খবর পোছাইতে আর কোন সমস্যা নাই।তাহলে কেন আমরা সারা দুনিয়ার মানুষেরা ভিন্ন ভিন্ন চাঁদ দেখার ফতোয়া দিব??তাহলে তো বাংলাদেশের মধ্যেও এক হুকুম চলবেনা। কারন সময়ের ব্যবধান এখানেও আছে।ঢাকায় এক সময়,চট্টগ্রামে আরেক সময়, খুলনা আরেক সময়,সিলেটে আরেক সময়,এই জন্য প্রত্যেক এলাকার লোকদের আলাদা আলাদা চাঁদ দেখে ঈদ করা উচিত।তা কি করে?যাই হোক আবু হানিফা(রহ:) ফতোয়া দিলেন সারা দুনিয়া চলবে এক হুকুমে।এটা মানা হয়না।হানাফীরাও এটা মানে না।তাহলে আবু হানিফাকে মানল না কিন্তু।
.
.
যারা নিজ নিজ দেশের চাঁদ অনুযায়ী রোজা ও ঈদ পালন করে থাকেন তাদের
কাছে আমাদের প্রশ্নঃ
.
১। দেশের সীমানা কতটুকু হবে তা কোরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী পেশ করবেন?
.
২। নিজ নিজ দেশের চাঁদ অনুযায়ী রোজা ও ঈদ পালন করতে হবে এর স্বপক্ষে
আল্লাহর কিতাব বা রাসূল সাঃ এর হাদিস থেকে দালিল পেশ করবেন। যেমন ভাবে আমরা করেছি। আমরা চাই দলিল,
একই দিনে রোজা ও ঈদ পালণ করতে হবে
না, এর দলিল কি?
.
৩। আপনাদের বক্তব্য অনুযায়ী "সারা বিশ্বের সাথে একই সময়ে আমরা ইফতার,
সেহরী ও নামাজ আদায় করি না"। এই জন্য আপনারা সারা বিশ্বের সাথে একই বারে/দিনে ঈদ পালন করতে চান না।
তাহলে আপনাদের নিকট আমাদের প্রশ্ন, ঢাকার মানুষের সাথে চট্টগ্রামের মানুষ
একই সময়ে ইফতার, সেহরী ও নামাজ আদায় করে না। তবে কেন রোজা ও ঈদ
একই বারে/দিনে পালন করেন?
.
৪। সূর্যের সময়ের হিসেবে উল্লেখিত দুই শহর অর্থ্যাৎ ঢাকা ও চট্টগ্রাম এর সময়ের
পার্থক্য বজায় রেখে যদি আপনারা একই বারে/দিনে রোজা ও ঈদ পালন করতে
পারেন। তবে কেন সারা বিশ্বের সাথে সূর্যের সময়ের পার্থক্য বজায় রেখে একই দিনে/বারে রোজা ও ঈদ পালন করতে
পারেন না?
.
৫।চট্টগ্রামে বা পঞ্চগড়ে বা সিলেটে বা সাতক্ষীরায় চাঁদ দেখা গেলে এবং ঢাকায় চাঁদ না দেখা গেলে, ঢাকায় চাঁদ
না দেখেও ঐসব এলাকার চাঁদ দেখার সংবাদ শুনে ঐসব এলাকার সাথে একই বারে রোযা বা ঈদ করছেন, তাহলে
মধ্যপ্রাচ্যে চাঁদ দেখা গেলে এবং ঢাকায় চাঁদ না দেখা গেলে, মধ্যপ্রাচ্যের চাঁদ দেখার সংবাদ শুনে ঢাকায় একই বারে রোযা বা ঈদ কেন
করতে পারছেন না???
.
৬।যদি বলেন, ঢাকার সাথে মধ্যপ্রাচ্যের দূরত্ব, ঢাকার সাথে চট্টগাম বা পঞ্চগড় বা সিলেট বা সাতক্ষীরার দূরত্বের
চেয়ে বেশি, তাহলে দূরত্ব কতদূর হলে রোজা বা ঈদ একই দিনে/বারে করা যাবে, তা দলিল সহ স্পষ্ট করে বলবেন কি??
.
৭।যদি বলেন, ঢাকার সাথে মধ্যপ্রাচ্যের সময়ের পার্থক্য, ঢাকার সাথে চট্টগাম বা পঞ্চগড় বা সিলেট বা সাতক্ষীরার সময়ের পার্থক্যের চেয়ে বেশি, তাহলে সময়ের পার্থক্য কতদূর হলে রোজা বা ঈদ একই দিনে/বারে করা যাবে, তা দলিল সহ স্পষ্ট করে বলবেন কি??
.
৮। কেন মুসলিম বিশ্বে একই বারে/রাতে শবে কদর পালিত হয়না? শবে কদরের রাত
কি একটা নাকি দুইটা? ৩০ পারা কুরআন একত্রে যে রাতে নাযিল হয়েছিল সেটাই
কদরের রাত। ৩০ পারা কুরআন কি মধ্যপ্রাচ্যে এক রাতে আর বাংলাদেশে তার পরের রাতে অর্থাৎ দুই রাতে নাযিল হয়েছে?
.
৯। রাসূল (স) এর হাদিস দ্বারা প্রমানিত, কিয়ামত ১০ ই মুহাররম শুক্রবারে হবে।
বাংলাদেশের সরকারী গণনা অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে যদি শুক্রবারে ১০ ই মুহাররম
হয় তবে বাংলাদেশে সেদিন ৯ ই মুহাররম শুক্রবার। আবার যদি বাংলাদেশে শুক্রবারে ১০ ই মুহাররম হয় তবে মধ্যপ্রাচ্যে সেদিন ১১ ই মুহাররম শুক্রবার। কিয়ামত মধ্যপ্রাচ্যের ১০ ই মুহাররম শুক্রবারে হলে বাংলাদেশে সেদিন ৯ ই মুহাররম থাকার কারনে
কিয়ামত হবেনা। আর বাংলাদেশের ১০ ই মুহাররম শুক্রবারে কিয়ামত হলে
মধ্যপ্রাচ্যে ১১ ই মুহাররম থাকার কারনে কিয়ামত হবেনা। তাহলে কিয়ামত কোন
দেশের ১০ ই মুহাররম শুক্রবার অনুযায়ী হবে? বাংলাদেশে কিয়ামত কি
মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরে হবে আর আমরা কি তা টি.ভি তে দেখব?
.
১০।বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরে রোজা ঈদ করলে এই অবস্হা হয়:
বাংলাদেশ থেকে কেউ রোযা শুরু করে রমযান মাসের যে কোন দিন মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে সেখানে ঈদ করলে তার রোযা ২৮ বা ২৯ টি হয়, আবার মধ্যপ্রাচ্য থেকে কেউ রোযা শুরু করে রমযান মাসের যে
কোন দিন বাংলাদেশে এসে এখানে ঈদ করলে তার রোযা ৩০ বা ৩১ টি হয়। অথচ
২৮ বা ৩১ রোজার বিধান ইসলামে নাই।
হাদীস শরীফে বলা হয়েছে আরবী মাস ২৯-এর কম হবেনা এবং ৩০-এর বেশী
হবেনা। এক্ষেত্রে সমাধান কি?? দলিল সহ জানতে চাই।
.
১১। অনেকেই বলেন নামাজের ওয়াক্ত মধ্যপ্রাচ্যে ও বাংলাদেশে এক নয়। তাহলে শবে কদর এক বারে/রাতে হবে কিভাবে। তাদেরকে বলি, নামাজের ওয়াক্ত এবং সেহরি ইফতার হয় সূর্য অনুযায়ী কিন্তু যে কোন আরবী মাস শুরু
হয় চাঁদ অনুযায়ী। সূর্য ও চাঁদের হিসাব আলাদা। নামাজের ওয়াক্ত এবং সেহরি
ইফতার কি চাঁদ অনুযায়ী হয়? আরবী মাস কি সূর্য অনুযায়ী হয়?
.
১২। সময়ের পার্থক্য বজায় রেখে যদি সারা পৃথিবীতে জুম্মা একই দিনে/বারে
(শুক্রবার)পড়া যায় তবে সময়ের পার্থক্য বজায় রেখে সারা পৃথিবীতে ঈদের
নামাজ কেন একই দিনে/বারে পড়া যাবে না?
.
১৩। আরাফার দিন হচ্ছে সেটাই, যেদিন হাজীগন আরাফার মাঠে থাকেন। তার
পরদিন হাজীগন আরাফার মাঠে থাকেন না। তাহলে যেদিন হাজীগন আরাফার
মাঠে থাকেন না সেদিন আরাফার দিন কিভাবে হয় ?
.
১৪।যদিও ঈদের দিন রোযা রাখা হারাম, তবুও অনেক জায়গাতেই এমন বর্ডার/ দেশের সীমারেখা (মানুষের তৈরী, আল্লাহর দেয়া নয়) আছে, যার একপাশে
রোযা এবং অন্যপাশে ঈদ হচ্ছে একই দিনে, নিজ দেশের আকাশসীমায় আলাদা চাঁদ দেখার কারনে। তাহলে সেই
বর্ডার এর মানুষ কি রোজা করবে নাকি ঈদ করবে?? ব্রিটিশের দেয়া বর্ডার অনুযায়ী কেন মুসলিমরা রোযা ঈদ করবে??
.

. ইমাম আবু হানিফা রহ. এর বক্তব্য ও এটাই এবং তিনিই সঠিক ।
.
পৃথিবী একটা, চাঁদ একটা, কোরআন একটা,
সমস্ত মুসলিম একজাতি, সবাই এক নবীর উম্মাত, তাহলে ঈদ কেন তিন দিনে করব ?
সন্দেহ নিরসনের জন্য বলতে হয় হানাফী মাজহাবসহ তিনটি মাজহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো: নতুন চাঁদ উদয়ের স্থানের বিভিন্নতার কোন গুরুত্ব নেই এবং সর্বপ্রথম হেলালকেই সারা বিশ্বের সকলের অনুসরণ করতে হবে ।
.
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. যে কোন একটি দেশে নতুন চাঁদের উদয় প্রমানিত হলে বিশ্বের সকল মানুষের
উপর তার অনুসরন জরুরী হয়ে পড়ে।
[উৎস: আল মুখতার ১ম খন্ড ১২৯ পৃঃ / ফতহুল কাদীর (শেরহে ফাতহুল কাদীয়সহ) ১ম খন্ডঃ পৃ ২৪৩/মারাকীন ফালাহ পৃঃ ৫৪০-৫৪১/ আল-বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০]
২. আর উদয়ের স্থান ও সময়ের বিভিন্নতার কোন গুরুত্ব নেই । (উৎসঃ
কাদী খান ১ম খন্ডঃ পৃঃ ১৯৮/ মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড পৃঃ২৩৯ / আল মুখতার ১ম
খন্ড পৃঃ ১২৯ আল-ফাতওয়া আল হিন্দিয়াহ ১ম খন্ড, পৃঃ১৯৮/ আল বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০/ ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড পৃঃ ২৪৩/রদ্দুল মুহতার (শামী) ২য় খন্ড পৃঃ ৩৯৩)
৩. যদি পৃথিবীর পশ্চিমাংশের
বাসিন্দারা রমজান মাসের নতুন চাঁদ দেখেন, তাহলে তাদের এ দেখাতেই
পূর্বাংশের লোকদের উপর (রোজা ও ঈদ) ওয়াজিব হয়ে যাবে (উৎসঃ আল-বাহুরুর
রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০ / মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড ২৩৯ পৃঃ আল হিন্দিয়াহ
(ফাতোয়ায়ে আলমগীরী) ২য় খন্ড ১৯৮-১৯৯ পৃঃ। ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড ২৪৩ পৃঃ।
বাজাজিয়াহ ৪/৯৫)
.
সুতরাং হানাফী মাযহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলোঃ পৃথিবীর যে কোন দেশেই নতুন চাঁদ উদয় প্রমানিত হয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে নতুন চাঁদ উদয়ের খবর দূরবর্তী কোন দেশে পৌছে, তাহলে সে
দেশের মুসলিমদের চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় উৎসবসমূহ পালন করতে
হবে ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ৯০% -এর বেশী মুসলিম হানাফী মাযহাবের অনুসারী ।
.
ইমাম মালিক (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. যখন বসরা শহরবাসী রমজানের নতুন চাঁদ
দেখবে, অতঃপর তা কুফা, মদীনাও ইয়েমেনবাসীদের কাছে পৌছবে তাহলে
ইমাম মালিক (রহঃ) থেকে তাঁর শিষ্যদ্বয় ইবনুল কাসিম ও ইবনে ওয়াহাবের বর্ণনামতে শেষোক্ত দেশবাসীর প্রতিও
ওয়াজিব হয়ে যাবে । অথবা যদি বাদ পড়ে তবে সে রোযা কাযা করতে হবে
(উৎস আল-মুনতাকা-শরাহল মুয়াত্তা ২য় খন্ড পৃঃ ৩৭)
২. এবং রোযা রাখার নির্দেশ
ব্যাপকভাবে সকল দেশকে শামিল করবে, চাই সে দেশ কাছে হোক বা বহুদুরে
হোক (উৎসঃ শরহুজ জুরকানী ২য় খন্ড পৃঃ ১৯২/ আশ্-শরহুছ ছগীর ২য় খন্ড পৃঃ ৪/ ফাতহুর রাহীম ১ম খন্ড পৃঃ ১৩০)
সুতরাং মালিকী মাযহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলোঃ নতুন চাঁদ উদয় প্রমানিত হয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে চাঁদ উদয়ের খবর দূরবর্তী কোন দেশে পৌছে তাহলে সে দেশের মুসলিমদের চাঁদের সাথে
সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় উৎসব সমূহ পালন করতে হবে । উল্লেখ্য, হযরত মালিক (রাঃ) ছিলেন সাহাবী ।
.
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. কোন একটি দেশের লোকেরা নয়া চাঁদ দেখবে সকল দেশের লোকদের উপর রোযা ফরজ হয়ে পড়ে (উৎসঃ মুঘনী পৃঃ ৭৯/ আররদুন নাদী শরহ কাফীল মরতাদী পৃঃ
১৬১/ জাদুল মুসতাকনে পৃঃ ৭৮ /আস- সালসাবীল ১ম খন্ড পৃঃ২০২ / উমদাতুল ফিকহ- পৃঃ৪৯)
২. চাই সে দেশ কাছে হোক বা দূরে হোক (উৎস: উদমাতুল ফিকহ- পৃঃ ৪৯ / মুযনী পৃঃ
৭৯)
৩. চাই চাঁদ উদয়ের স্থান ও কাল ভিন্নই হোক। (উৎসঃ উমদাতুল ফিকহে পৃঃ ৪৯)
সুতরাং হাম্বলী মাযহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলোঃ নতুন চাঁদ উদয় প্রমানিত হয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে চাঁদ উদয়ের খবর দূরবর্তী কোন দেশে পৌছে তাহলে সে দেশের মুসলিমদের চাঁদের সাথে
সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় উৎসব সমুহ পালন করতে হবে ।
.
শাফেয়ী মাযহাবঃ -যদি চাঁদ কোন এক দেশে দেখা যায় অথচ অন্য দেশে দেখা গেল না, তাহলে দেশ দুটি কাছাকাছি হয় তাহলে উভয় দেশ এক দেশের মতো গন্য
হবে ।
.
আর দূরবর্তী হয় তাহলে দুটি মত রয়েছে ।
তার মধ্যে শুদ্ধতর মত হলো এক্ষেত্রে অন্য দেশের লোকদের প্রতি এর হুকুম বর্তাবে না (উৎসঃ রওদাতুত্তালেবীন ২য় খন্ড পৃঃ
৩৪৮/ মাতনুল মিনহাজ মা’মুযনিল মুহতাজ ১ম খন্ড পৃঃ ৪২২। আল-মুহাজ্জাব ১ম খন্ড পৃঃ ১৭৯ শরহমুসলিম (লিন্-নব্বী) ৭ম খন্ড,১৯৭ পৃঃ। এহইয়াউ উলুমিদ্দীন ১ম খন্ড পৃঃ ২৩২)
.
সুতরাং পৃথিবীর যে কোন স্থানে যে কোন ভাবে চাঁদ দেখা প্রমানিত হলে সারা বিশ্বে মুসলিমদের উপর ইসলামের
বিধি-বিধান পালন করা এবং হিজরী সন গণনা করা সম্পর্কে একমাত্র ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) ছাড়া বাকী সব ইমাম ঐক্যমত পোষন করেছেন । কিন্তু
পরবর্তীতে শাফেরী মাযহাবের
মুজতাহিদরা (গবেষক) এ নিয়ে গবেষণা করে বিভিন্ন ধরনের মত পোষন করেছেন ।
শাফেয়ী মাযহাবে দ্বিমত থাকায় এবং বাকী তিন মাযহাব ঐক্যমত পোষন
করায় পৃথিবীর যে কোন স্থানে যে কোন ভাবে চাঁদ দেখা প্রমানিত হলে যারা বিশ্বে মুসলিমদের উপর ইসলামের বিধি-বিধান পালন করা এবং
হিজরী সন গণনা করা অবশ্য করণীয় (ওয়াজিব) ।
.
শাইখুল হাদিস মুফতি মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন রহমানি(হাফিযাহুল্লাহ)

Comments

Popular posts from this blog

Error Solved "601 no corresponding activity was found"

প্রয়োজনীয় ২টি টুলঃ Driver Update Monitor (DUMo) ও Software Update Monitor (SUMo)

চাঁদের অবস্থান ভূগোল দিয়ে