ক্রসওভার পয়েন্ট

প্রিয় ভাই ও বোন সকল,
রমজানের শুভেচ্ছা রইল 
আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো ক্রসওভার পয়েন্ট বিষয়ক চিন্তাভাবনা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেন চলাচল নিরাপদ ও নির্ভিঘ্ন রাখার অভিপ্রায়ে প্রত্যেক ইন্টারলকিং স্টেশনে স্ট্যার্ন্ডার্ড অনুযায়ী নিরাপত্তামূলক ডিভাইস ব্যবহার করে। এগুলোকে এক কথায় আইসোলেশন বলে। এই আইসোলেশন আবার পাঁচ প্রকার, তারমধ্যে ক্রসওভার পয়েন্ট অন্যতম। 
রেলওয়েতে পয়েন্টের কাজ মূলত এক লাইন থেকে অন্য লাইনে কোন ট্রেন বা ইঞ্জিনকে আনা নেওয়া করা। আমাদের স্বপ্নের ট্রেন গুলো সাধারনত মেইন লাইন আর লুপ লাইনেই চলতে অভ্যস্থ। তবে বিপত্তি তখনি শুরু হয় যখন কোন একটা মেইন লাইন, চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তখন ত্রাণকর্তা ক্রসওভার পয়েন্টকেই আশির্বাদ মনে করা হয়।
তাই জানতে হবে ক্রসওভার পয়েন্ট কি?
তার আগে জেনে নেই, রেলওয়েতে দুধরনের সেকসান আছে, এক সিঙ্গেল লাইন (যেমন লাকসাম আখাউড়া সেকসান), দুই ডাবল লাইন(যেমন চট্টগ্রাম টু লাকসাম) 
সিঙ্গেল লাইনের ক্ষেত্রে আপ আর ডাউন বলতে ঐ একটাই মেইন লাইন। তাই সেখানে ক্রসওভার পয়েন্ট বসানোর সুযোগ নেই।
ডাবল লাইনের ক্ষেত্রে মেইন লাইন দুটি, আপ এবং ডাউন। আর
ক্রসওভার পয়েন্ট সেখানেই বসানো হয়। অতএব আমরা সংক্ষেপে বলতে পারি, ক্রসওভার পয়েন্ট হলো দুটো মেইন লাইনে আপ লাইন থেকে ডাউন লাইন অথবা ডাউন থেকে আপ লাইনে উঠার একটা মাধ্যম । 
আর বিস্তারিত ক্রসওভার পয়েন্ট বলতে পাশাপাশি চলা দুটো মেইন লাইনের মাঝে এক প্রকার আন্তঃসংযোগ কে বুঝায়, যেখানে কোনো একটি মেইন লাইন(সেটা আপ হোক আর ডাউন হোক) কোনো কারনে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেলে, তখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প উপায়ে উক্ত ক্রসওভার পয়েন্ট দ্বারা সচল লাইন দিয়ে ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করা হয় । এটি সাধারনত একটা স্টেশনের হোম সিগনালের ভিতরেই স্থাপন করা হয়, তবে সব স্টেশনে এই সুবিধে নেই। আবার যেহেতু এটি কালেভদ্রে ব্যবহার হয়, তাই অনেক স্টেশনে এটি থাকলেও, অবহেলায় এর কার্যকারীতা তেমন একটা থাকেনা। চলুন তাহলে একটা সরল অংক করি। মনে করি একটি ট্রেন বারতাকিয়া স্টেশনে পৌছার আগেই খবর পাওয়া গেলো যে, মিরশরাই বারতাকিয়া সেকশানে অতিবৃষ্টির কারনে আপ মেইন লাইনের নিচে শক্ত মাটির স্তর ও পাথর ভেসে গিয়ে লাইনের নিচে পিলার বিহীন স্রোতস্বিনী সুরুঙ্গ তৈরি হয়ে গেল। এমতাবস্থায় উক্ত আপ লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল নিরাপদ নয়। তাই কি এমন বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে যার মাধ্যমে যত কম বিলম্বতা এড়িয়ে উক্ত ট্রেনকে তার গন্তব্যে পাঠানো যাবে।
সমাধান :- 
যেহেতু একটা ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে আপ লাইন দিয়ে ৫২কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বারতাকিয়া স্টেশনে এসেছে এবং এরপর আপলাইনে প্রতিবন্ধকতা থাকার কারনে উক্ত ট্রেনকে ডাউন লাইন দিয়ে চালানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তাই উক্ত ট্রেনকে ডাউন লাইনে আনতে হলে পুনরায় ৫২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম গিয়ে আবার ডাউন লাইনে আসতে হবে। যা সত্যিই এক হতাশাব্যঞ্জক বিরক্তিকর পদ্ধতি। তাই এই সংকট নিরসনে রেলওয়ে, মধ্যবর্তী স্টেশন গুলিতে ক্রসওভার পয়েন্ট সিস্টেমের ব্যবস্থা করে রেখেছে, যাতে কম বিলম্বে ট্রেন আপ লাইন দিয়ে পিছনে ব্যাক করে ক্রসওভার দিয়ে ডাউন লাইনে উঠিয়ে ট্রেন চলাচল করতে পারে তবে শর্ত একটাই, উক্ত সেকসানকে সিঙ্গেল লাইন সেকসান ঘোষনা করতে হবে এবং নিয়ম অনুযায়ী একটি ট্রেন পরবর্তী স্টেশনে না পৌছানো পর্যন্ত ২য় কোনো ট্রেনের লাইন ক্লিয়ার দেওয়া যাবে না। তাই এরুপ অবস্থায় দেখতে হবে বারতাকিয়া স্টেশনে ক্রসওভার সুবিধে আছে কিনা, যদি না থাকে তবে তার আগের কোন না কোনো ক্রসওভার সুবিধে যুক্ত স্টেশনে নিয়ে গিয়ে এই ট্রান্সশীপমেন্টের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। 
,
ধন্যবাদ আজ এই পর্যন্ত
আবার কোনো একদিন হাজির হবো নতুন কোনো বিষয় নিয়ে, সেই পর্যন্ত 
আল্লাহ হাফেজ

Comments

Popular posts from this blog

Error Solved "601 no corresponding activity was found"

প্রয়োজনীয় ২টি টুলঃ Driver Update Monitor (DUMo) ও Software Update Monitor (SUMo)

চাঁদের অবস্থান ভূগোল দিয়ে